বিবিধ

সঞ্চয়ের অভ্যাস তৈরিতে ১০ পরামর্শ

মাস শেষে হাত ফাঁকা, এই অভিজ্ঞতা অনেকেরই। বর্তমান বাজার পরিস্থিতিতে অনেক সময় এর থেকে মুক্তির উপায় বের করা ভীষণ কষ্টসাধ্য। তবে কিছু অভ‍্যাস বা নিয়ম আছে, যা আপনাকে এমন পরিস্থিতি মোকাবিলায় সাহায্য করতে পারে।

সঞ্চয় মানেই ভবিষ্যতের ভাবনা। বিন্দু বিন্দু করেই সিন্ধু তৈরি হয়। তাই অল্প অল্প করে সঞ্চয় করার অভ্যাস তৈরি করুন। যাঁরা চাকরি করছেন তাঁদের জন্য সঞ্চয় করা সহজ। এ ছাড়া যাঁরা ব্যবসা করেন, ফ্রিল্যান্সিং করেন তাঁদেরও সঞ্চয় করা উচিত। সঞ্চয় আসলে সবার জন্যই। এটি সবাইকে নিরাপদ করতে পারে। তাই সঞ্চয়ের জন্য কখনই ‘করি-করছি-করব’ ভেবে সময় নষ্ট করবেন না। কম করে টাকা খরচ করলেই শুধু টাকা বাড়ে না। টাকা বাড়ার জন্য সঠিকভাবে সঞ্চয় করতে হয়।

১. জীবনযাপনের ধরন পরিবর্তন করুন

হ্যাঁ, সঞ্চয়ের জন্য জীবনযাপনের ধরন পরিবর্তন করা খুবই জরুরি। নইলে আপনি সঞ্চয় করতে পারবেন না। মনে রাখবেন, যখন আপনি চাকরি করছেন, তখন আপনার কর্মপরিকল্পনা অন্যদের চেয়ে আলাদা। এটাকে দীর্ঘদিনের জন্য চালিয়ে নিতে আপনার আগের জীবনযাপন খুব একটা কাজ করবে না। আগের মতো চললে প্রচুর খরচ হতে থাকবে এবং মাস শেষে আপনার হাতে প্রায় কিছুই থাকবে না।

২. নিজের জন্য খরচ করুন

হাতে টাকা আছে বলে প্রয়োজনের অতিরিক্ত কিছু কিনে অযথাই টাকা নষ্ট করবেন না। বরং এমনভাবে খরচ করুন যাতে সেই খরচ ভবিষ্যতের জন্য আপনাকে সহায়তা করে।

৩. বিজ্ঞাপনে ভুলবেন না

ব্যাংক বা আর্থিক প্রতিষ্ঠানে সঞ্চয়ের জন্য প্রথমে ভেবে নিন আপনি কীভাবে সঞ্চয় করতে চান, কত দিনের জন্য সঞ্চয় করবেন, কত টাকা করে সঞ্চয় করবেন। আপনার পাওয়া বেতনের সঙ্গে সামঞ্জস্য রেখে তারপর ব্যাংক বা আর্থিক প্রতিষ্ঠানগুলোতে খোঁজ নিন। ব্যাংক বা আর্থিক প্রতিষ্ঠানের বিজ্ঞাপনে ভুলবেন না। প্রকৃত অবস্থার খোঁজ নিন নিজে।

৪. পরামর্শ নিন অভিজ্ঞদের

আপনি যে অফিসে চাকরি শুরু করেছেন সে অফিসের সঙ্গে কোনো না কোনো আর্থিক প্রতিষ্ঠান অথবা ব্যাংক যুক্ত আছে। প্রথমে সেসব প্রতিষ্ঠানের খোঁজ করুন। আপনি যে প্রতিষ্ঠানে চাকরি করছেন তার সঙ্গে কোনো ব্যাংকের বা আর্থিক প্রতিষ্ঠানের যদি চুক্তি না থাকে, তাহলে পছন্দসই ব্যাংক বা আর্থিক প্রতিষ্ঠানের খোঁজ করে তাদের সেবাগুলো ভালোভাবে দেখে নিন। প্রয়োজনে কোন সেবাটি আপনি নেবেন সে ব্যাপারে অভিজ্ঞ কারও পরামর্শ নিন।

৫. জরুরি সময়ের জন‍্য জমান

জরুরি সময়ের জন্য প্রতি মাসে কিছু করে টাকা জমান। এই টাকা আপনার ব্যাংকে রাখা টাকার বাইরে রাখুন। খুব জরুরি প্রয়োজনেই শুধু এই টাকা খরচ করুন। এতে ব্যাংকে রাখা টাকায় হাত দিতে হবে না।

৬. প্রতি মাসের বাজেট তৈরি করুন

মাসের প্রথম দিন থেকে এ বাজেট অনুসরণ করুন। বাজেটের বাইরে প্রয়োজন না হলে টাকা খরচ করবেন না।

৭. স্বল্পকালীন সঞ্চয়ের পরিকল্পনা করুন

প্রথমে এক বছর বা দুই বছর এ রকম স্বল্পকালীন সঞ্চয়ের পরিকল্পনা করুন। স্বল্পকালীন এ সঞ্চয় আপনাকে এককালীন বেশ ভালো পরিমাণ টাকা দেবে। সেই টাকা একসঙ্গে করে দীর্ঘ মেয়াদে সঞ্চয়ের চিন্তা করতে পারেন। কিন্তু স্বল্পকালীন সঞ্চয় বন্ধ করবেন না।

৮. সমমনাদের সঙ্গে সঞ্চয়

আমাদের দেশে যৌথ সঞ্চয়ের প্রবণতা আছে। যে প্রতিষ্ঠানে চাকরি করছেন সেখানে আপনার সমমানসিকতার সহকর্মীদের একত্রিত করে প্রতি মাসে নির্দিষ্ট পরিমাণ অর্থ কোনো ব্যাংক বা আর্থিক প্রতিষ্ঠানে সঞ্চয় করতে থাকুন। প্রতিষ্ঠানের বাইরে এভাবে আপনার বন্ধুদের সঙ্গেও সঞ্চয় করতে পারেন।

৯. মূল সঞ্চয়ের বাইরেও কিছু টাকা রাখুন

বিশ্বের ধনীদের অন্যতম ওয়ারেন বাফেট বলেছিলেন, ‘আপনার সব ডিম এক ঝুড়িতে রাখবেন না।’ এ কথাকে মেনে বিভিন্নভাবে সঞ্চয় করুন। বিভিন্নভাবে সঞ্চয় মানে কিন্তু একাধিক ব্যাংকে টাকা জমানো নয়। প্রতি মাসে আপনার মূল সঞ্চয়ের বাইরেও কিছু টাকা রেখে দিন আপনার কাছে। এ টাকা খরচ করবেন না।

১০. খুচরা পয়সা সঞ্চয়ের অভ্যাস করুন

অবজ্ঞা না করে খুচরা পয়সা সঞ্চয়ের অভ্যাস করুন। একটা সময় পর দেখবেন আপনার জমানো খুচরা পয়সা আপনাকে অনেক সাহায্য করবে। বিন্দু বিন্দু করে সিন্ধু করতে চাইলে দেরি না করে আজকে থেকেই শুরু করুন।

Leave a Reply

Back to top button