স্বাস্থ্য পরামর্শ

নিরামিষভোজিরাই বেশি সুস্থ থাকেন

নিরামিষভোজিরা আমিষ ভোজিদের চেয়ে অনেক বেশী সুস্থ থাকেন। বিশেষজ্ঞরা বলেন, অন্তত এক সপ্তাহের জন্যও যদি নিরামিষভোজি হওয়া যায়, তাহ’লে স্বাস্থ্যের যে লাভ হবে তা অন্য কোন খাবার কিংবা ওষুধে হবে না। এ সম্পর্কে নিম্নে আলোচনা করা হ’ল।-

১। ডি-টক্সিফাইড : একজন নিরামিষভোজি, যাদের খাদ্য তালিকায় প্রতিদিন যথেষ্ট ফাইবার সম্পন্ন সবজি যেমন লাউ, মিষ্টি কুমড়া, সবুজ শাক, বাঁধাকপি ইত্যাদি থাকে তাদের দেহের ক্ষতিকর দেহকোষগুলো নিষ্ক্রিয় হয়ে পড়ে। এই সবজিগুলো দেহের সব বিষাক্ত উপাদান বাইরে বের করে দেয়। ডিম, মাছ এবং গোশতে এই ফাইবার কম থাকে বলে, এগুলো দেহ থেকে বিষাক্ত পদার্থ নিঃসরণে খুব বেশি সক্রিয় ভূমিকা পালন করতে পারে না।

২। হাড়কে শক্ত করা : গোশতভোজি ব্যক্তিদের নিয়মিত খাদ্য তালিকায় সবজি খুব সামান্য পরিমাণে থাকে। কিন্তু গোশতে আছে প্রচুর প্রোটিন এবং সবজিতে আছে প্রচুর ক্যালসিয়াম। ক্যালসিয়াম হাড়কে শক্ত করে। দেহে প্রোটিনের পরিমাণ বেড়ে গেলে এবং সেই তুলনায় ক্যালসিয়াম কমে গেলে, ক্যালসিয়াম তার কাজ করতে পারে না। যার ফলে দেহের অতিরিক্ত প্রোটিন শুষে নেয় ক্যালসিয়ামকে, যা হাড়ের ক্ষতি করে। তাই পুরোপুরি নিরামিষভোজি হওয়া না গেলেও, অন্তত দৈনন্দিন খাদ্য তালিকায় গোশত এবং সবজির একটা আদর্শ ভারসাম্য বজায় রাখতে হবে।

৩। কার্বোহাইড্রেট ঘাটতি পূরণ : একজন গোশতভুক মানুষের খাদ্য তালিকায় পর্যাপ্ত পরিমাণে কার্বোহাইড্রেটের ঘাটতি থাকে, যা কেটসিস-এ আক্রান্ত করতে পারে। কেটসিস হ’ল দেহে অতিরিক্ত চর্বি বেড়ে যাওয়ার ফলে শক্তির ঘাটতি এবং ক্লান্তির সৃষ্টি হওয়া। কিন্তু খাদ্য তালিকায় পর্যাপ্ত পরিমাণ সবজির উপস্থিতি এই কার্বোহাইড্রেটের ঘাটতি পূরণ করতে পারে।

৪। পরিপাক প্রক্রিয়া সহজ করা : সবজিতে এমন সব উপাদান আছে, যা দেহের পরিপাক ক্রিয়াকে সহজ করে। কিন্তু গোশত এবং মাছে প্রচুর পরিমাণে চর্বি এবং তেল থাকায় তা আমাদের হজম প্রক্রিয়াকে জটিল করে তোলে।

৫। সুন্দর ত্বক : বিট, টমেটো, মিষ্টি কুমড়া এবং করলা নিয়মিত খেলে ত্বকের বিভিন্ন দাগ দূর হয়ে যায়। অন্যদিকে পেয়ারা, আপেল, নাশপাতি ত্বকে এনে দেয় আকর্ষণীয় উজ্জ্বলতা।

৬। ওযন নিয়ন্ত্রণ : ওযন বাড়তে না দেয়ার সবচেয়ে সহজ উপায় হ’ল গোশত না খাওয়া। আর ওযন কমানো এবং নিয়ন্ত্রণের সবচেয়ে সহজ উপায় হ’ল নিরামিষভোজি হওয়া। গমের রুটি, শিম, মটরসুঁটি, বাদাম এবং বিভিন্ন রঙিন ফল দেহের কোলেস্টেরলের মাত্রা কমায়, রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণ করে এবং স্থূলতা থেকে মুক্তি দেয়।

৭। স্বস্তিতে থাকে দাঁত : আমাদের পেষণ দাঁতের কাজ হ’ল খাবার চিবিয়ে তা হজমের জন্য সালিভায় পাঠানো। কিন্তু পেষণ দাঁত দিয়ে পেষণ বা চিবানোর কাজ না করে যখন টেনে গোশত ছেড়ার কাজে ব্যবহার করা হয়, তা দাঁতে এক ধরনের চাপের সৃষ্টি করে। অন্যদিকে সালিভায় গিয়েও হজম প্রক্রিয়ায় সৃষ্টি করে জটিলতা। কিন্তু সবজি সেদিক থেকে দাঁত এবং সালিভা দু’টোকেই স্বস্তি দেয়।

৮। ফিটোনিউট্রিয়েন্টস : ডায়াবেটিস, ক্যান্সার, কিডনির রোগ, হৃদরোগ এবং হাড়ের ক্ষয়রোধ করা যায় পর্যাপ্ত পরিমাণের ফিটোনিউট্রিয়েন্টস গ্রহণের মাধ্যমে। এই ফিটোনিউট্রিয়েন্টস হ’ল এক ধরনের স্বাস্থ্যকরী উপাদান, যা শুধু সবুজ শাক সবজিতেই পাওয়া যায় এবং এটি দেহে গ্লুকোজ ও রঞ্জক পদার্থের জন্য উপকারী।

এ সম্পর্কিত আরও পোস্ট

Leave a Reply

Back to top button