রোগ ও প্রতিকার

হাঁটুর জোড়ার রোগে আর্থোস্কোপি

হাঁটু শরীরের বড় জোড়াগুলোর মধ্যে একটি এবং শরীরের ওযন বহন করার ক্ষেত্রে অন্যতম ভূমিকা পালন করে। জোড়ার বিভিন্ন ধরনের রোগ ও ইনজুরিতে হাঁটু আক্রান্ত হয় বেশী। হাঁটু তিনটি হাড়, চারটি লিগামেন্ট ও দুইটি মেনিসকাস সমন্বয়ে গঠিত। জোড়ার ভেতর ও বাহিরের গুরুত্বপূর্ণ লিগামেন্টগুলো জোড়াকে সুরক্ষা করে এবং দৈনন্দিন হাঁটুর বিভিন্ন নড়াচড়ায় সহায়তা করে। মেনিসকাস দুই হাড়ের মাঝখানে অবস্থান করে শরীরের ওযন সমভাবে বিতরণ করে এবং হাড়কে ঘর্ষণ হ’তে রক্ষা করে। চিকিৎসা বিজ্ঞানের উন্নতির এ যুগে হ’লেও আমাদের দেশে অত্যাধুনিক যন্ত্রের সাহায্যে চিকিৎসা সীমিত আকারে শুরু হয়েছে। হাড় ও জোড়ার চিকিৎসার এক সফল ও কার্যকর সমাধান এনেছে বিস্ময়কর আর্থোস্কোপিক সার্জারি। এটি হ’ল আর্থোপেডিক চিকিৎসায় বর্তমান যুগের সর্বশেষ ও সর্বাধুনিক পদ্ধতি। ছোট ছিদ্রের মাধ্যমে ক্যামেরা যুক্ত যন্ত্র (স্কোপ) জোড়ায় প্রবেশ করিয়ে এবং যন্ত্রের সাথে যুক্ত বাহিরে টিভি স্ক্রিন বা মনিটর দেখে অপারেশন করা হয়।

হাঁটুর রোগের লক্ষণসমূহ :

মাঝে মধ্যে হাঁটু ফুলে যায় আবার স্বাভাবিক হয়। ব্যথা হয় এবং নড়াচড়ায় ব্যথা বেড়ে যায়। অনেকক্ষণ হাঁটু ভাঁজ করে বসার পর হাঁটু সোজা করা যায় না; এদিক-ওদিক নড়াচড়া করে হাঁটু সোজা করতে হয়। হাঁটু সম্পূর্ণ ভাজ বা সোজা করা যায় না।

জয়েন্ট ছুটে যাবে বা ঘুরে যাবে এরকম মনে হয়, বিশেষ করে অসমতল জায়গায় হাঁটলে। সিঁড়ি দিয়ে উঠানামা করতে এবং বসা থেকে দাঁড়াতে কষ্ট হয়। হাঁটু ভাজ ও সোজা করলে মনে হয় কিছু একটা জোড়ায় ঢুকছে এবং বের হচ্ছে। প্যাটেলা বা নিক্যাপে ব্যথা এবং হাঁটু ভাজের সময় আংশিক বা সম্পূর্ণ স্থানচ্যুতি হয়।

আর্থ্রোস্কোপিক চিকিৎসা :

ক্রুসিয়েট লিগামেন্ট ইনজুরির ক্ষেত্রে নতুন লিগামেন্ট পুনঃস্থাপন করা হয়। মেনিসকাস ইনজুরি হ’লে রিপেয়ার বা সেলাই করা হয়। ক্ষেত্র বিশেষে সেভিং করা হয় এবং টুকরো অংশ বের করা হয়। ওসটিওফাইট (নতুন হাড়) হাড় ও তরুণাস্থির আলাদা অংশ এবং লুজ বডি রিমোভ করা হয়। সাইনোভিয়াল বায়োপরি ও ওয়াশআউট আর্থাস্কোপি দিয়ে করা হয়। প্যাটেলা বা নি-ক্যাপ পুনঃস্থাপন ও লিগামেন্ট তৈরী করা হয়। জোড়ার সমস্যা কনজারভেটিভ বা মেডিকেল চিকিৎসায় ভাল না হ’লে এবং যে ক্ষেত্রে আর্থ্রোক্সোপিক সার্জারি প্রথম থেকেই প্রয়োজন সেক্ষেত্রে অভিজ্ঞ আর্থ্রোস্কোপিক সার্জনের পরামর্শ নেয়াই শ্রেয়। আর্থ্রোস্কোপিক সার্জারির পর নিয়মিত এবং উপযুক্ত পরিচর্যার মাধ্যমে রোগী দ্রুত সুস্থ হয়ে উঠবে।

এ সম্পর্কিত আরও পোস্ট

Leave a Reply

Back to top button