রাজশাহী বিভাগ

শহীদ স্মৃতি সংগ্রহশালা, রাজশাহী

উত্তরাঞ্ছলের সর্বোচ্চ বিদ্যাপীঠ রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের সবুজ প্রান্তরে মুক্তিযুদ্ধভিত্তিক সংগ্রহ নিয়ে গড়ে উঠেছে দেশের প্রথম শহীদ স্মৃতি সংগ্রহশালা (RU Martyrs Memorial Museum)। মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক জাদুঘর হিসেবে পরিচিত এই সংগ্রহশালায় মুক্তিযুদ্ধের ইতিহাস ও নানা স্মৃতি সংরক্ষিত আছে। তরুন প্রজন্মকে মুক্তিযুদ্ধের চেতনায় উজ্জীবিত করতে ১৯৭৬ সালে রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের শহীদ মিনার কমপ্লেক্সে এই সংগ্রহশালাটি যাত্রা শুরু করে। প্রতিদিন এখানে অসংখ্য দর্শনার্থী সংগ্রহশালায় আসেন।

৬,৬০০ বর্গফুট জায়গা নিয়ে চমৎকার স্থাপত্য নৈপুণ্যে গড়া শহীদ স্মৃতি সংগ্রহশালা তিনটি গ্যালারিতে বিভক্ত। প্রথম গ্যালারিতে ১৯৫২ সাল থেকে ১৯৭১ সাল পর্যন্ত মুক্তিযুদ্ধের নানা সংগ্রহ অর্থাৎ বাংলাদেশের ইতিহাসে বিভিন্ন নিদর্শন স্থান পেয়েছে। এই গ্যালারিতে আছে ১৯৬৯ সালের গণ অভ্যত্থানের বিভিন্ন ছবি, মুক্তিযোদ্ধাদের ব্যবহৃত পোশাক, রাজশাহীর প্রথম শহীদ মিনারের ছবি, মুক্তিযুদ্ধ ভিত্তিক বিভিন্ন আলোকচিত্র, শিল্পীদের আঁকা মুক্তিযুদ্ধের ছবি, প্রতিকৃতি ও মুক্তিযুদ্ধের সাথে জড়িত অসংখ্য দূর্লভ সংগ্রহ। দ্বিতীয় গ্যালারিতে আছে শহীদ বুদ্ধিজীবীদের ব্যবহৃত জিনিপত্র, মুক্তিযুদ্ধের বিভিন্ন প্রতীকী ভাস্কর্য, সাতজন বীরশ্রেষ্ঠের ছবি, পাকিস্থানী হানাদার বাহিনীর অত্যাচারের ছবি ও প্রতিকৃতি সহ অন্যান্য সংগ্রহ। তৃতীয় গ্যালারিতে রয়েছে একাত্তরের গণহত্যায় নিহত শহীদের মাথার খুলি, বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবর রহমানের ঐতিহাসিক আলোকচিত্র, পাকিস্থানী হানাদার বাহিনীর আত্মসমর্পণ ও বিজয়ী মুক্তিসেনাদের ছবি।

শহীদ স্মৃতি সংগ্রহশালার একটি প্রধান অংশ মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক গবেষণা পাঠাগার হিসাবে ব্যবহৃত হচ্ছে। এই লাইব্রেরীতে ১৯৪৭ সাল থেকে ১৯৭১ সালের বিভিন্ন বই, সংকলন, ইশতেহার, বাঁধাইকৃত পত্রিকা ও বিভিন্ন পেপার কাটিং রক্ষিত আছে।

সময়সূচী: শুক্র ও শনিবার বাদে প্রতিদিন সকাল ৮ টা থেকে বেলা ২ টা পর্যন্ত খোলা থাকে এই শহীদ স্মৃতি সংগ্রহশালা।

কিভাবে যাবেন

দেশের যেকোন প্রান্ত থেকে বাস ও ট্রেনে রাজশাহী যাওয়া যায়। শহর থেকে রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের দূরত্ব প্রায় ৫ কিলোমিটার। রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের মেইন গেইট দিয়ে প্রবেশ করে প্রশাসনিক ভবনের ডান দিকে শহীদ মিনারের পাশে শহীদ স্মৃতি সংগ্রহশালার অবস্থান।

কোথায় থাকবেন

রাজশাহী শহরে রাত্রি যাপনের জন্য হোটেল গ্রীণসিটি ইন্টারন্যাশনাল, হোটেল স্টার ইন্টারন্যাশনাল, হোটেল নাইস ইন্টারন্যাশনাল ও মুক্তা ইন্টারন্যাশনালের মতো ভালো মানের বেশকিছু আবাসিক হোটেল রয়েছে।

কোথায় খাবেন

রাজশাহী শহরের ভিতরে ফাস্টফুড, চাইনিজ ও বাংলা খাবারের বিভিন্ন মানের রেস্তোরা আছে।

এ সম্পর্কিত আরও পোস্ট

Leave a Reply

Back to top button