উৎসব পার্ক, রাজশাহী
রাজশাহীর বাঘা উপজেলা থেকে মাত্র ২ কিলোমিটার দূরে বাঘা দীঘির পাড়ে বিনোদনের ভিন্ন আয়োজন নিয়ে গ্রামীণ শান্ত পরিবেশে উৎসব পার্ক (Utshab Park) গড়ে তোলা হয়েছে। ২০১৪ সালে প্রায় ৮০ বিঘা জায়গা জুড়ে সম্পূর্ণ ব্যাক্তিগত উদ্যোগে পার্কটি স্থাপন করা হয়। উৎসব পার্ক গ্রামের সহজ সরল মানুষদের জীবনে শহুরে ভাবধারায় বিনোদনের ব্যতিক্রমী মাত্রা যোগ করেছে।
গাছ গাছালির ছায়া ঘেরা মনোরম পরিবেশের উৎসব পার্কের আকর্ষণীয় রাইডের মধ্যে আছে ট্রেন, নাগরদোলা, ঘূর্ণি এবং দোলনা সহ ৮টি ভিন্নধর্মী রাইড, বিভিন্ন পশু পাখির দৃষ্টিনন্দন ভাস্কর্য, বসার বেঞ্চ, লেক এবং পিকনিক স্পট। পার্কের লেকের জলে ভেসে বেড়ানোর জন্য রয়েছে প্যাডেল বোটের ব্যবস্থা। ছুটির দিন ছাড়াও অন্যান্য দিনগুলোতে সকাল থেকে সন্ধ্যা পর্যন্ত শিশু কিশোর ও নানা বয়সী দর্শনার্থীদের পদভারে মুখরিত থাকে চমৎকার এই বিনোদন কেন্দ্রটি।
প্রবেশ টিকেটের মূল্য ও সময়সূচী
উৎসব পার্ক প্রতিদিন সকাল ৮ টা থেকে সন্ধ্যা ৭ টা পর্যন্ত দর্শনার্থীদের জন্য উন্মুক্ত থাকে। জনপ্রতি প্রবেশ টিকেটের মূল্য ২০ টাকা। আর প্রতিটি রাইড উপভোগের জন্য টিকেট মূল্য ২০ টাকা। ৪ জনের নৌকা ভ্রমণ খরচ ৫০ টাকা এবং পিকনিক স্পটের ভাড়া ৫০০ টাকা। এছাড়া প্রাইভেট কার, ছোট ও বড় মাইক্রো গাড়ির পার্কিং খরচ ১৫০ থেকে ৩৫০ টাকা পর্যন্ত।
কিভাবে যাবেন
উৎসব পার্কে যেতে চাইলে প্রথমে রাজশাহী জেলার বাঘা উপজেলায় আসতে হবে। ঢাকা হতে সড়ক, রেল এবং আকাশ পথে রাজশাহী যাওয়া যায়। ঢাকার গাবতলী, আব্দুল্লাপুর এবং কল্যাণপুর থেকে শ্যামলী, হানিফ, বাবলু এন্টার প্রাইজ, গ্রিনলাইন ও দেশ ট্র্যাভেলসের মতো এসি বা নন এসি বাসে রাজশাহী যাওয়া যায়। বাস ভেদে জনপ্রতি ভাড়া পড়বে ৬০০ থেকে ১২০০ টাকা।
ট্রেনে কমলাপুর রেলওয়ে ষ্টেশন থেকে সিল্কসিটি, ধুমকেতু, বনলতা বা পদ্মা এক্সপ্রেসে রাজশাহী যাওয়া যায়। শ্রেণী ভেদে জনপ্রতি ট্রেন টিকেটের মূল্য ৩৪০ থেকে ১২২৩ টাকা। এছাড়া প্রয়োজন ভেদে ঢাকার শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর থেকে বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইন্স, ইউএস বাংলা এয়ারলাইন্স ও নভোএয়ারের ফ্লাইটে চড়ে রাজশাহী যেতে পারবেন।
রাজশাহী শহর থেকে বাঘা উপজেলার দূরত্ব প্রায় ৪৭ কিলোমিটার। স্থানীয় বাস সার্ভিস ও অটোতে চড়ে বাঘা উপজেলায় যাওয়া যায়। আর বাঘা উপজেলার যেকোন প্রান্ত হতে রিকশা বা পায়ে হেঁটে ২ কিলোমিটার দূরে অবস্থিত উৎসব পার্কে পৌঁছাতে পারবেন।
কোথায় থাকবেন
উৎসব পার্কের রেস্ট হাউসে সিঙ্গেল, ত্রিপল ও ডাবল রুমের ব্যবস্থা আছে। রুম ভাড়া ১০০০ টাকা। এছাড়া চাইলে রাজশাহী ফিরে এসে রাত্রিযাপন করতে পারবেন। রাজশাহীতে রাত্রিযাপনের জন্য হোটেল গ্রিন সিটি ইন্টারন্যাশনাল, হোটেল স্টার ইন্টারন্যাশনাল, হোটেল নাইস ইন্টারন্যাশনাল, মুক্তা ইন্টারন্যাশনাল ও পর্যটন কর্পোরেশনের মোটেল সহ বেশকিছু ভাল মানের আবাসিক হোটেল রয়েছে।
কোথায় খাবেন
উৎসব পার্কের অভ্যন্তরে আইসক্রিম, ফুচকা, চটপটি ইত্যাদি বিভিন্ন মুখরোচক খাবার পাওয়া যায়। আর পার্কের কাছে অবস্থিত রেস্তোরাগুলোতে প্রয়োজনীয় খাবার খেতে পারবেন। রাজশাহী শহরের রেস্তোরাঁগুলোতে ফাস্টফুড, চাইনিজ, বাংলা ইত্যাদি বিভিন্ন ধরণের খাবারের ব্যবস্থা আছে।
রাজশাহীর অন্যান্য দর্শনীয় স্থান
রাজশাহীর অন্যান্য দর্শনীয় স্থানের মধ্যে বরেন্দ্র গবেষণা জাদুঘর, শিশু পার্ক, বাঘা মসজিদ, পুটিয়া রাজবাড়ী ও কেন্দ্রীয় চিড়িয়াখানা অন্যতম।