রোগ ও প্রতিকার

শীতে শিশুর গলা ব্যথায় করণীয়

‘গলাব্যথা’ বা ‘সোর থ্রোট’ শিশুদের অসুখ-বিসুখের এক সাধারণ উপসর্গ। মৌসুম বদলের সময়ে বা শীতের শুরুতে এই সমস্যা বেড়ে যায়। বর্ষা শেষে বা শীত শেষেও গলাব্যথা বাড়তে পারে। সাধারণত খাদ্যনালির ওপরের অংশ, টনসিল ও তার চারপাশের অংশে প্রদাহের কারণে গলাব্যথা হয়। পাঁচ থেকে আট বছর বয়সী শিশুরা এ সমস্যায় সাধারণত বেশি ভোগে। ব্যাকটেরিয়া ও ভাইরাসজনিত সংক্রমণের কারণে প্রদাহ হয়। ৩০ শতাংশ ক্ষেত্রে দায়ী জীবাণু হ’ল গ্রুপ-এ বিটা হিমোলাইটিক স্ট্রেপটোকক্কাস। এটি সংক্রামক। লালা বা শ্লেষ্মার মাধ্যমে ছড়ায়।

ভাইরাসজনিত গলাব্যথায় শিশুর সর্দি-জ্বর, কাশি, চোখ লাল হয়ে যাওয়ার মতো অন্যান্য সমস্যাও হ’তে পারে। আবার ব্যাকটেরিয়া সংক্রমণ হ’লে হঠাৎ করে তীব্র গলাব্যথা, অনেক জ্বর, মাথায় যন্ত্রণা, বমি বা বমির ভাব, পেটব্যথা, গলার পাশে ব্যথাসহ ফুলে যেতে পারে। ব্যাকটেরিয়াজনিত সোর থ্রোটের কারণে টনসিল ও তার চারপাশের অংশ লাল হয়ে যায়। মাঝে মাঝে শরীরে ফুসকুড়ি দেখা যায়।

গলাব্যথায় সঠিক মাত্রায় যথাযথ ওষুধ সেবন করলে স্বস্তি মিলবে। লবণ পানিতে গলা গড়গড়া করলেও ভালো লাগবে। এ সময় শিশুকে যথেষ্ট পানি ও তরল খাবার দিতে হবে। শিশুর ঢোক গিলতে বা শ্বাসপ্রশ্বাসে কষ্ট হ’লে, লালা ঝরলে বা শরীরে অতিরিক্ত তাপমাত্রা (১০১ ডিগ্রি ফারেনহাইটের বেশী) ৪৮ ঘণ্টার অধিক সময় ধরে বজায় থাকলে অনতিবিলম্বে চিকিৎসকের পরামর্শ নিতে হবে।

শীতে সর্দি-কাশি থেকে মুক্ত রাখতে দারুণ উপকারী নিম্নোক্ত পানীয়টি খুব উপকারী। এটি ঘরেই সহজে তৈরি করা যায়। হালকা গলা খুসখুস করতে থাকলে এপানীয়টি পান করে যেমন আরাম বোধ হবে, তেমনি এটা মুখরোচকও বটে।

প্রয়োজনীয় উপাদান : আধা কাপ ফ্রেশ কমলার রস, আধা ইঞ্চি আদা কুচি করা, ২ টেবিল চামচ অর্গানিক মধু, আধা ইঞ্চি কাঁচা হলুদ মিহি কুচি অথবা এক চিমটি হলুদ গুঁড়ো।

প্রস্ত্তত প্রণালী : ছোট একটা বাটিতে সবকিছু মিশিয়ে নিতে হবে একটা বিটার বা চামচ দিয়ে। এরপর গ্লাসে ঢেলে পান করতে হবে। এর সাথে মেশানো যায় দারুচিনি, লবঙ্গ, মরিচ গুঁড়ো।

এই পানীয়ের উপকারিতা :

মধুতে আছে অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট যা ইনফ্ল্যামেশন ও কাশি কমাতে সাহায্য করে। আদা গলা খুসখুস ভাব কমিয়ে আরাম দিতে পারে এবং বমি বমি ভাবও কমাতে পারে। হলুদ অ্যান্টিব্যাকটেরিয়াল ও অ্যান্টিভাইরাল উপাদান হিসাবে কাজ করে। কমলায় থাকা ভিটামিন সি রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়িয়ে সর্দি-কাশি কমায়। ঠান্ডা লাগলে যে কোন চিকিৎসক বলবেন বেশি করে তরল পান করতে। খুব সহজে এই পানীয় তৈরি করে পান করে সর্দি-কাশি মুক্ত থাকা যায়।

এ সম্পর্কিত আরও পোস্ট

Leave a Reply

Back to top button