খুলনা বিভাগ

মিয়ার দালান, ঝিনাইদহ

ঝিনাইদহ জেলা সদর থেকে মাত্র ৩ কিলোমিটার দূরে মুরারীদহ গ্রামে অবস্থিত মিয়ার দালান (Miyar Dalan) একটি ঐতিহ্যবাহী দর্শনীয় স্থান। ১২৩৬ বঙ্গাব্দে জমিদার কতৃক নির্মিত মিয়ার দালানটি ১৯৪৭ সালে দেশ ভাগের সময় সেলিম চৌধুরী নামের এক ব্যক্তির কাছে বিক্রি করে দেয়া হয়। তাই স্থানীয়ভাবে অনেকের কাছেই এটি সেলিম চৌধুরীর বাড়ি হিসাবেও পরিচিত। এছাড়া মিয়ার দালানকে বিশেষভাবে পরিচিত করেছিল এখানে থাকা একটি খেজুর গাছ। আর এই খেজুর গাছটির ১২টির বেশি চূঁড়া ছিল, যার প্রতিটি চূঁড়া থেকেই রস আহরণ করা যেত।

মিয়ার দালান থেকে নবগঙ্গা নদীর তলদেশ দিয়ে একটি সুড়ঙ্গ তৈরি করা হয়েছিল, যার প্রবেশমুখ বর্তমান সময়েও চিহ্নিত করা যায়। নবগঙ্গা নদীতে বাঁধ দিয়ে মিয়ার দালানের মত নির্মিত ঐতিহ্যবাহী কোন স্থাপনা ঝিনাইদহে আর দ্বিতীয়টি দেখতে পাওয়া যায় না। মিয়ার দালানের দেয়ালে কাব্যিক ভাবে নির্মাতা, নির্মাণের ব্যয় এবং অন্যান্য তথ্য লেখা রয়েছে।

মিয়ার দালানের দেয়ালের ঐতিহাসিক লেখাটি হচ্ছে:

শ্রী শ্রী রাম মুরারীদহ গ্রাম ধাম,
বিবি আশরাফুন্নেসা নাম,
কি কহিব হুরির বাখান।
ইন্দ্রের অমরাপুর নবগঙ্গার উত্তর ধার,
৭৫০০০ টাকায় করিলাম নির্মাণ।
এদেশে কাহার সাধ্য বাধিয়া জলমাঝে কমল সমান।
কলিকাতার রাজ চন্দ্র রাজ,
১২২৯ সালে শুরম্ন করি কাজ
১২৩৬ সালে সমাপ্ত দালান।

কিভাবে যাবেন

রাজধানী ঢাকার গাবতলী থেকে রয়েল, জেআর, সোনার তরী, চুয়াডাঙ্গা ডিলাক্স এবং এসবি পরিবহনের এসি/নন-এসি বাসে চড়ে ঝিনাইদহ যাওয়া যায়। এসি/নন-এসি বাসের টিকেটের মূল্য জনপ্রতি ৪৫০ থেকে ৬০০ টাকা।

ঝিনাইদহ সদর থেকে ভ্যান, রিক্সা বা অটোরিক্সায় সহজেই ৩ কিলোমিটার দূরে অবস্থিত মিয়ার দালান দেখতে যাওয়া যায়।

কোথায় থাকবেন

ঝিনাইদহে থাকার জন্য বিভিন্ন মানের আবাসিক হোটেল রয়েছে। এদের মধ্যে হোটেল ড্রীম ইন্টারন্যাশনালের এসি/নন-এসি রুমে প্রতি রাত থাকতে ৭০০ থেকে ১৫০০ টাকা খরচ করতে হবে। আর হোটেল কুটুমে থাকতে গুনতে হবে ৫০০ থেকে ৮০০ টাকা।

কোথায় খাবেন

ঝিনাইদহ শহরে আহার, ফুড সাফারী, সুইট, ঘরোয়া ইত্যাদি রেস্টুরেন্টে প্রয়োজনীয় খাবারের পাশাপাশি ঘোষ এর মিষ্টি, পায়রা চত্ত্বরের ছানা ও ছানার জিলাপী খেয়ে দেখতে পারেন।

এ সম্পর্কিত আরও পোস্ট

Leave a Reply

আরিও দেখুন
Close
Back to top button