ফল

পেপে চাষে করণীয়

জাত : শাহী পেপে ,বাবু, সিনতা, রেড লেডি হাইব্রিড।

বীজের পরিমাণ : ১২-১৫ গ্রাম/প্রতি বিঘা।

চারা উৎপাদনের সময় :

কার্তিকের মাঝামাঝি থেকে পৌষের মাঝামাঝি এবং মাঘের মাঝামাঝি থেকে চৈত্রের মাঝামাঝি বীজ বপনের উপযুক্ত সময়।

চারা উৎপাদন স্থান :

পলিথিন ব্যাগে চারা উৎপাদন করতে হয়। এজন্য ১৫´১০ সে.মি. আকারের পলিথিন ব্যাগে ২ ভাগ পচা গোবর+২ ভাগ মাটি+১ ভাগ বালি দ্বারা ভর্তি করে ব্যাগের তলায় ২-৩টি ছিদ্র করতে হবে। বীজ বপনের আগে রিডোমিল স্প্রে করতে হয়। বীজ বপনের আগে হালকা রোদে বীজগুলি ২ ঘণ্টা রেখে দিয়ে বপনের ২৪ ঘণ্টা আগে পানিতে ভিজিয়ে, পানি ঝরিয়ে ভেজা কাপড়ে মুড়ে উষ্ণ স্থানে রাখতে হয়। ২-৩ ঘণ্টা পর প্রতিটি পলি ব্যাগে টাটকা সংগৃহীত বীজ হ’লে ১টি করে আর পুরাতন হ’লে ২-৩টি বীজ (তবে খেয়াল রাখতে হবে বীজ যেন সুস্থ সবল ও রোগমুক্ত হয়) বপন করে হালকা পানি দিয়ে ছায়াযুক্ত ও বাতাস চলাচল করে এমন স্থানে রাখতে হবে। ব্যাগে একের বেশি চারা রাখা উচিত নয়। ২০-২৫ দিন বয়সের চারার ১-২% ইউরিয়া স্প্রে করলে চারার বৃদ্ধি ভালো হয়। নিয়মিত হালকা পানি সেচ দিতে হবে।

মাদায় সার প্রয়োগ ও চারা রোপন পদ্ধতি

মাদায় চারা রোপণ :

পলিথিন ব্যাগে উৎপাদিত ৩০-৪০ দিন (৪-৬ ইঞ্চি উচ্চতা) বয়সের চারা জমিতে মাদা বা গর্ত করে রোপণ করতে হবে। মাদা তৈরির সময় এক মাদা থেকে অপর মাদার দূরত্ব রাখতে হবে ২ মিটার এবং মাদার আকার হবে দৈর্ঘ, প্রস্থ ও গভীরতায় প্রায় ৬০ সে.মি. ।

মাদায় সার প্রয়োগের ২-৩ সপ্তাহ পর প্রতি মাদায় ৩টি করে চারা ত্রিভুজাকারে রোপণ করতে হবে। দু’সারির মাঝামাঝি ৪৫ সে.মি নালার ব্যবস্থা রাখলে সেচ বা বৃষ্টির অতিরিক্ত পানি নিষ্কাশনের সুবিধা হবে।

চারা লাগানোর ১ দিন পূর্বে হালকা পানি দিয়ে পরদিন জো অবস্থায় ভালভাবে কুপিয়ে রিডোমিল স্প্রে করতে হবে। চারা যাতে হেলে না পড়ে সে ব্যবস্থা করতে হবে। হালকা পানি দিতে হবে।   

মাদায় প্রয়োগ

সারের নামপরিমাণসারের নামপরিমাণ
ভার্মি কম্পোষ্ট২ কেজিজিপসাম২৫০ গ্রাম
পচা গোবর সার৬ কেজিবোরণ৩০ গ্রাম
সরিষার খৈল৫০ গ্রামজিংক সালফেটবা দস্তা সার২০ গ্রাম
টি.এস.পি৪০০ গ্রাম

উপরি সার প্রয়োগ

গাছে নতুন পাতা আসলে   

               ১ম কিস্তি    ২য় কিস্তি    ৩য় কিস্তি   

ইউরিয়া      ৫০ গ্রাম    ৫০ গ্রাম    ৫০ গ্রাম

এম.ও.পি    ৫০ গ্রাম    ৫০ গ্রাম    ৫০ গ্রাম

গাছে ফুল আসলে

              ১ম কিস্তি    ২য় কিস্তি    ৩য় কিস্তি

ইউরিয়া     ১০০ গ্রাম    ১০০ গ্রাম    ১০০ গ্রাম

এম.ও.পি   ১০০ গ্রাম    ১০০ গ্রাম    ১০০ গ্রাম

অন্তর্বর্তীকালীন পরিচর্যা

পেঁপে গাছ পুরুষ, স্ত্রী কিংবা উভয় লিঙ্গের মিশ্রণ হতে পারে। প্রতি মাদায় ৩টি করে পেঁপের চারা ত্রিভুজাকারে করে রোপণ করতে হয়। পরে গাছে ফুল আসলে প্রতি মাদায় একটি করে স্ত্রী অথবা উভয় লিঙ্গ গাছ রেখে বাকিগুলো কেটে ফেলতে হবে। পরাগায়ণের জন্য প্রতি ১০-১৫টি স্ত্রী গাছের জন্য একটি পুরুষ গাছ রাখতে হবে।

বেশি করে পেঁপে ফলানোর জন্য অনেক সময় কৃত্রিম পরাগায়ণ দরকার হয়। সকাল বেলায় সদ্য ফোটা পুরুষ ফুল সংগ্রহ করে এর পাঁপড়িগুলো ছিঁড়ে ফেলে দিয়ে পুংকেশর স্ত্রী ফুলের গর্ভ কেশরের উপর ধীরে ধীরে ২-৩ বার ছোঁয়ালে পরাগায়ণ হবে। এভাবে একটি পুরুষ ফুল দিয়ে ৫-৬টি স্ত্রী ফুলের পরাগায়ণ করা যেতে পারে।

পেঁপে গাছ ঝরে পড়ে যেতে পারে অথবা বেশি পরিমাণে ফল ধরলে কাত হয়ে যেতে পারে কিংবা ভেঙ্গে যেতে পারে। তাই গাছকে রক্ষা করার জন্য বাঁশের খুঁটি পুঁতে কান্ডের সাথে বেঁধে দেয়া দরকার।

শীতকালে প্রতি ১০-১২ দিন এবং গ্রীষ্মকালে ৬-৮ দিন অন্তর পেঁপের জমিতে সেচ দেয়ার ব্যবস্থা করতে হবে এবং সেচের অতিরিক্ত পানি যাতে নালা দিয়ে বের হয়ে যেতে পারে সেদিকে খেয়াল রাখতে হবে। পেঁপে বাগান সব সময় আগাছামুক্ত রাখতে হবে।

এ সম্পর্কিত আরও পোস্ট

Leave a Reply

আরিও দেখুন
Close
Back to top button